বাংলাদেশ

৩০ কোটি টাকা খরচের পর আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল আবার ‘ভাগাড়’

আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধারে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু হলেও, বাস্তবতা হলো—এই উদ্যোগ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আনতে পারেনি। চ্যানেলটি আবারও বর্জ্য ফেলার স্থান বা ‘ভাগাড়’-এ পরিণত হয়েছে।

প্রকল্পের সারসংক্ষেপ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২২ সালে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনঃখননের কাজ শুরু করে। প্রথম ধাপে ২,৭০০ মিটার এলাকায় ময়লা ও পলি অপসারণের জন্য প্রায় ২১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল চ্যানেলের প্রশস্ততা বৃদ্ধি, দখলদার উচ্ছেদ, এবং জলাবদ্ধতা নিরসন। মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, এই কার্যক্রমের ফলে চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ।

বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ
যদিও প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু অগ্রগতি হয়েছে, তবে চ্যানেলটি আবারও কঠিন বর্জ্য ও পলিতে ভরে গেছে। এতে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, এবং চ্যানেলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া, চ্যানেলের আশেপাশে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে, যার মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে ।
dbcnews.tv

মূল সমস্যাসমূহ
অবৈধ দখল: চ্যানেলের আশেপাশে অবৈধ স্থাপনার কারণে খননকাজের সুফল স্থায়ী হয়নি।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব: নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি চ্যানেলে ফেলা হচ্ছে, যা দূষণ বাড়াচ্ছে।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব: প্রকল্পটি স্বল্পমেয়াদি ছিল, এবং স্থায়ী সমাধানের জন্য কোনো কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি।

সুপারিশ
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি:

অবৈধ দখল উচ্ছেদ: চ্যানেলের আশেপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আধুনিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে বর্জ্য চ্যানেলে না পড়ে।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা: চ্যানেল সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে একই সমস্যা পুনরাবৃত্তি না হয়।

পরিশেষে, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধারের জন্য কেবল খননকাজ যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন সমন্বিত ও টেকসই উদ্যোগ, যা পরিবেশ রক্ষা এবং নগর উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button