বাংলাদেশ

এল অন্য রকম লতাকরবী

মানিকগঞ্জের সুলতানপুরে ফুটেছে লেজি লতাকরবী ফুল

নিচে প্রতিবেদনটি সাংবাদিকতার আদলে নতুনভাবে সজ্জিত করা হলো:


‘লেজি লতাকরবী’: মানিকগঞ্জে দেখা মিলল বিরল এক ফুলের

📍 সুলতানপুর, মানিকগঞ্জ
✍️ প্রতিবেদন: নিজস্ব প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে ফুটেছে এক অদ্ভুত ফুল। করবীর মতো দেখতে হলেও এর পাপড়ির অগ্রভাগে লম্বা লেজের মতো অংশ, যা সহজেই একে আলাদা করে তুলেছে। তরুপ্রেমিক তানভীর আহমেদের বাগানে ফোটা এই ফুলের নাম—স্ট্রোফ্যানথাস প্রিউসি (Strophanthus preussii)। বাংলা নাম এখনো স্থির না হলেও ফুলপ্রেমীরা একে ডেকে নিচ্ছেন ‘লেজি লতাকরবী’ নামে।

করবী থেকে আলাদা কেন?

করবী ফুল—রক্তকরবী, শ্বেতকরবী কিংবা গোলাপি বা হলুদ করবী—বাংলাদেশে পরিচিত গুল্মজাত উদ্ভিদ। কিন্তু নতুন দেখা দেওয়া এই লতাকরবী লতানো স্বভাবের গুল্ম, যার প্রতিটি ফুল থেকে ঝুলে পড়ে প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা সুতা বা লেজের মতো অংশ। এ লেজই তাকে দিয়েছে ভিন্ন পরিচয়, দিয়েছে দর্শনীয় রূপ।

ফুলের গঠন ও বৈশিষ্ট্য

স্ট্রোফ্যানথাস প্রিউসি প্রজাতির এই উদ্ভিদ মূলত ট্রপিক্যাল আফ্রিকা, গায়ানা, তানজানিয়া ও অ্যাঙ্গোলার বনাঞ্চলে জন্মায়। এ দেশে এটি সম্প্রতি বাগানিদের বাগানে ঠাঁই করে নিচ্ছে।
ফুলের রং কমলা-ঘিয়া, ভিতরে থাকে মেরুন আঁচড়। সুগন্ধযুক্ত ফুল বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে থোকা থোকা ফুটে থাকে। ফুলের লেজের মতো অংশ মাকড়সার পায়ের মতো ঝুলে থাকে। তাই ইংরেজি নামকরণ হয়েছে Spider Tracers, Medusa Flower কিংবা Poison Arrow Vine

ঔষধি গুণ ও বন্য ব্যবহার

তথ্য বলছে, এই উদ্ভিদের বীজ ও শিকড় গণোরিয়া, ক্ষতসেবা, এমনকি বিষাক্ত তির তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে আফ্রিকায়। স্থানীয় আদিবাসীরা শিকার ও যুদ্ধের সময় ব্যবহার করত এ গাছ থেকে তৈরি বিষাক্ত তির।

বাগানির চোখে ‘নতুন তারকা’

তানভীর আহমেদ বলেন, “আমি বহু বছর ধরেই গাছ সংগ্রহ করি। এই গাছটা যখন প্রথম ফুল দিল, তখনই জানতাম, এটা বিশেষ কিছু। এখন সবাই দেখতে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, গাছটি লতা হিসেবে মাটিতে ছড়িয়ে বা খুঁটি বেয়ে উঁচুতে উঠতে পারে। যথাযথ পরিচর্যায় ডালপালা বাড়িয়ে ঝোপালো হয় ও প্রচুর ফুল ফোটায়।

সংরক্ষণের তাগিদ

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে স্ট্রোফ্যানথাস ওয়ালিচি ছাড়া এ গণের আর কোনো প্রজাতি পরিচিত নয়। তাই নতুন এ ফুল সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এই প্রজাতি ‘বন্য সৌন্দর্য’ হিসেবে শুধু নয়, ঔষধি সম্ভাবনাও বহন করে।


 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button