পর পর দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না- তারেক রহমান
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি ভবিষ্যতে এদেশে স্বৈরশাসনের কবর রচনা করতে চায়। আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতে চায়, রাষ্ট্র পরিচালনায় সমাজের জ্ঞানী-গুণীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুই কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায়। দেশে আর কোনোদিন কেউ যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে- সেটা নিশ্চিত করতে বিএনপি সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে চায় যাতে, কেউ যেন পর পর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন।
রোববার কুমিল্লা ও ফরিদপুরের নেতাকর্মীদের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি’র মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক এই সভা করছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিএনপি’র রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের পরিকল্পনা এবং গত বছর জুলাইয়ে উপস্থাপিত ৩১ দফা কর্মসূচির মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি তরুণ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে চায়, কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত যোগ্যতা অনুযায়ী ভাতা প্রবর্তন করতে চায়, নিশ্চিত করতে চায় সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি এবং অর্থনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে আনতে চায় যুগোপযোগী আমূল পরিবর্তন। গড়তে চায় ধর্ম-বর্ণ, গোত্র-গোষ্ঠী, সমতল পাহাড়ি নির্বিশেষে এক সুষম সমঅধিকারের আধুনিক বাংলাদেশ। দলের সকল নেতাকর্মীদের এই বার্তা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, গত ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার পতনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশায় যুক্ত হয়েছে নতুন আশাবাদ আর পরিবর্তিত হয়েছে ভাষা। এই পরিবর্তিত নতুন ভাষা পড়তে ও বুঝতে হবে, আর আশাবাদকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে- সেটা না পারলে ছিটকে পড়তে হবে। এতদিন শুধু আওয়ামী লীগ ছিল প্রকাশ্য প্রতিপক্ষ।
আমরা তাদের আক্রমণের ধরন বুঝতাম ও জানতাম। এখন ওরা ছাড়াও চারদিকে অসংখ্য অদৃশ্য প্রতিপক্ষ, এদের অবস্থান অন্ধকারে, এরা সর্বত্র। তাই সতর্ক থাকতে হবে এই দৃশ্যমান আর অদৃশ্য প্রতিপক্ষ মোকাবিলায়।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সফলতা আর জনপ্রিয়তার একমাত্র ভিত্তি ছিল দেশের সর্বস্তরের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা। এদেশের মানুষের প্রাণঢালা ভালোবাসা আর আস্থাই বিএনপি’র একমাত্র শক্তি। জনগণের এই প্রতিষ্ঠিত ভালোবাসাকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে, কোনোভাবেই এটা বিনষ্ট করা যাবে না। কেউ যদি কোনো অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় তাহলে সে যত বড়ই হোক, দল তাকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না।
বিএনপি পরিবার ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে অতীতের মতো আবারো দল হিসেবে সফল হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারেক রহমান।
ওদিকে গতকাল লন্ডন থেকে বিএনপি’র ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, আপনারাই বিএনপি’র প্রাণ। শত নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েও আপনারা জাতীয়তাবাদের আদর্শবিচ্যুত হননি। আমি জানি, অতীতে বছরের পর বছর ধরে আপনাদের অনেকেই মাফিয়া সরকার এবং তাদের দোসরদের দ্বারা নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপনাদের প্রতি আমার একটি অনুরোধ-অতীতে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণে আপনারা কেউ প্রতিশোধপরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। বরং অন্যায় অবিচারের শিকার হলে আইনগত পদক্ষেপ নিন। তবে খেয়াল রাখবেন কেউ যেন হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হন। আপনাদের প্রতি আমার স্পষ্ট বার্তা- শক্তি কিংবা ভয় দেখিয়ে নয়, ইনসাফ ও উদারতা দিয়ে মানুষের মন জয় করুন। জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন।
দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে বিএনপি’র ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা কিংবা বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশে গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপি দেশ ও জনগণের স্বার্থ সমুন্নত রেখেছে। এ কারণেই শত প্রতিকূল পরিস্থিতি পেরিয়েও দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে স্বাধীনতার ঘোষকের দল বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যাদের নেতৃত্বে, যাদের আত্মত্যাগে, যাদের শ্রম, ঘাম ও মেধায় বিএনপি আজ সারা দেশের জনগণের কাছে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে- দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভলগ্নে তাদের সবার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
দেশ বর্তমানে ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য ছাত্র-জনতার নিদারুণ যন্ত্রণাকর পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে গত ৫ই আগস্ট দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। তবে গণঅভ্যুত্থানের সাফল্য এবং সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দিতে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি সতর্ক থাকলে দেশকে আর বিপথে নেয়া যাবে না। আর পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে গত ১৫ বছরের অনাচার-অবিচার জনগণকে ভুলিয়ে দেয়া যাবে না। রাষ্ট্রীয় স্থাপনা গণভবন ছিল দেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতির ঐতিহ্যবাহী স্মারক। গণভবন বর্তমানে স্বৈরাচারী হাসিনার দুর্নীতি, দুঃশাসন, অনাচার ও অপকর্মের প্রতীক। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে এই গণভবনকে গুম, খুন, অপহরণ ও গণহত্যার মিউজিয়াম হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে। ২০০৯ সালের পিলখানায় সেনাহত্যা থেকে শুরু করে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৮, ২০২২ ও ২০২৩ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সময় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও গুম হওয়া মানুষের স্মৃতিগুলো এই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত থাকবে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য বাংলাদেশে আর কোনো শাসক যাতে স্বৈরাচারী হাসিনার মতো বর্বরোচিত পথ অনুসরণ না করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই মিউজিয়াম সেই বার্তাই বহন করবে।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে, এমন সময় হঠাৎ করেই চাপিয়ে দেয়া বন্যা পরিস্থিতি দেশের পূর্বাঞ্চলের বিস্তৃত অঞ্চল গ্রাস করে নিয়েছে। বন্যার করাল গ্রাসে প্রায় এককোটি মানুষ কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেক মানুষ মারা গেছেন। বিনষ্ট হয়েছে সম্পদ। এমন পরিস্থিতিতে সাধ্যমতো বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সকল কর্মসূচি বাতিল করেছে। ইতিমধ্যে কোনো কোনো এলাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে যারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এই মুহূর্তে তাদের বন্যা বিধ্বস্ত ঘরে ফেরানো কিংবা তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বন্যাকালীন পরিস্থিতি থেকেও কিছুটা জটিল। সুতরাং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখুন। সমন্বিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান। সফলজনকভাবে বন্যা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একজন নাগরিক হিসেবে সরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নেও সক্রিয় ভূমিকা রাখুন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র, রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, জন প্রশাসন ও বিচারবিভাগসহ সকল ক্ষেত্রে দেশকে এক নৈরাজ্যকর অবস্থায় রেখে স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়েছেন। দেশকে একটি ঋণনির্ভর, আমদানিনির্ভর ও পরনির্ভর রেখে স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়েছেন। শুধুমাত্র একজন হাসিনাই পালিয়ে যাননি। তার বিনা ভোটের মন্ত্রিসভা, বিনা ভোটের সকল এমপি এমনকি তাদের নিয়োগ দেয়া বায়তুল মোকাররমের খতিব পর্যন্ত পালিয়েছেন। দেশের এমন নজিরবিহীন ভয়ানক পরিস্থিতি অতিক্রম করে জনগণ এখন সম্মান এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে চায়। তাই দেশকে জনতার কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশে রূপান্তর করতে রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমের বিকল্প নেই। তবে রাষ্ট্র সংস্কার একটি চলমান, দীর্ঘমেয়াদি এবং ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। টেকসই ও কার্যকর উপায়ে রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ জরুরি। গণতান্ত্রিক বিশ্বের দেশগুলোতে জনগণের ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমেই রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। কারণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার এবং জনগণের মধ্যে কার্যকর সেতুবন্ধন হচ্ছে জনপ্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় সংসদ।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে একটি জনপ্রনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রশাসন, দুদকসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার কিংবা পুনর্গঠন জরুরি। সেই লক্ষ্য অর্জনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে বলে আমরা মনে করি। সুতরাং জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল রাষ্ট্র এবং সরকার গঠনের লক্ষ্যে দেশকে নির্বাচনী রোডম্যাপে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সবরকমের সহায়তা করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, আমাদের দল বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র সংস্কারকে কার্যকর করতে হলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি এবং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়টিও উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সে লক্ষ্যে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি দলীয় রাজনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিএনপি সকল মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমন্বয় করা এবং পরপর দুই টার্মের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন না করা ‘উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন, এমনকি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয়ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছে। আমি মনে করি, আমাদের দল বিএনপি মনে করে, জনগণের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংস্কারের বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমগুলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে হলে সেটি বেশি কার্যকর বলেও জনগণ বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক বিশ্বেও এটি স্বীকৃত।
তারেক রহমান বলেন, আমাদের আর পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। পলাতক স্বৈরাচার জাতীয় জীবনের ১৫টি বছর কেড়ে নিয়েছে। সেই দুঃস্বপ্নকে দূরে ঠেলে দিয়ে দেশের জনগণের সামনে একটি বৈষম্যহীন নিরাপদ মানবিক বাংলাদেশ গড়াই বিএনপি’র আগামী দিনের লক্ষ্য। বিএনপি বিশ্বাস করে তথ্যপ্রযুক্তির বর্তমান বিশ্বে কথামালার রাজনীতির পরিবর্তে বর্তমান প্রজন্ম প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে চায়। সমৃদ্ধি-সম্মান এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত দেখতে চায়। এজন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতির কাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং কর্মক্ষম জনশক্তির সামনে সম্ভাবনার সকল দরজা উন্মুক্ত করে দিতে হবে। নৈতিক মূল্যবোধ এবং কর্মমুখী শিক্ষানীতির পাশাপাশি দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে অগ্রাধিকারভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি’র ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভলগ্নে আমি বলতে চাই-স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকে ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বেগম খালেদা জিয়া দেশের ৮৭ হাজার গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। সেই দলের পতাকা এখন আমার, আপনার ও আমাদের হাতে। এই পতাকা এখন শুধু বিএনপি’র দলীয় পতাকাই নয়। এই পতাকা এখন দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সুতরাং যারা এই পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে চান, তারা কোনো প্রকার অনৈতিক কিংবা অনধিকার চর্চায় লিপ্ত হবেন না। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির সকল স্তরের, সকল পর্যায়ের প্রতি নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাংক্ষীকে মনে রাখতে হবে জনগণ বিএনপিকে বিশ্বাস করে। বিএনপি জনগণকে বিশ্বাস করে। কারণ জনগণই বিএনপি’র সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।