সাদেক এগ্রোকে অনৈতিক সহযোগিতা, সাভার ডেইরি ফার্মে অভিযান
সাদেক এগ্রোকে অনৈতিক সহযোগিতার অভিযোগে সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে (সাভার ডেইরি ফার্ম) বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (০১ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযান শুরু করে।
তবে অভিযান শেষে বিবৃতির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।
গরু মাফিয়া সাদেক এগ্রোর ইমরান হোসেন। যিনি গবাদিপশুর খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি। প্রভাবশালীদের সঙ্গে ওঠাবসা তার। চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন আর নানা চমকের কারণে বারবার আলোচনায় আসে তার খামার। সেখানে নিজেই ক্রেতাদের হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানান। দেখেশুনে মনে হয় এই ‘সাদেক এগ্রো’ ঘিরেই যেন পরিচালিত হয় তার সার্বিক কার্যক্রম। কিন্তু এই খামারের আড়ালে দিনে দিনে উত্থান ঘটেছে এক গরু মাফিয়ার, যার নাম শাহ ইমরান হোসেন।
দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে রাজধানী পর্যন্ত বিস্তার করেছেন গরু চোরাচালানের সিন্ডিকেট। ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাইপথে নানা জাতের গরু আনা হয়। সেজন্য স্তরে স্তরে রাখা হয় দালাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে তোলা হয়েছে গরু রাখার গোপন ডেরা। ঢাকার বছিলায় খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন এগ্রো ফার্ম। প্রয়োজনে ব্যবহার করেন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের।
এ খাতের অনিয়ম দেখার দায়িত্বে থাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরও তার হাতের মুঠোয়। কথামতো না চললে অন্য খামারিদের বিরুদ্ধে যখন তখন মামলা ঠুকে দেন। দাপট দেখিয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদও দখলে নিয়েছেন শাহ ইমরান হোসেন। কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে রাজধানীর উপকণ্ঠ বছিলায় মাত্র কয়েকটি গরু নিয়ে যাত্রা শুরু হয় সাদেক এগ্রোর। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে ব্যবসার। তখন থেকেই প্রভাবশালীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে শুরু করেন ইমরান। আর সেই সুবাদেই জড়িয়ে পড়েন গরু চোরাচালানের সঙ্গে। অল্প টাকায় ভারত থেকে গরু এনে রাজধানীর বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন। এ ছাড়া থাইল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকেও আনেন উন্নত জাতের গরু। ঈদুল আজহার আগে সাদিক এগ্রো ১৫ লাখ টাকার ছাগল বিক্রির ভিডিও প্রকাশের পর থেকে একের পর এক তথ্য আসতে থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এরপর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।