মধ্যপ্রাচ্যে বছরে প্রাণ হারায় ১০ হাজার প্রবাসী কর্মী
উপসাগরীয় অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) ছয়টি দেশে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে বছরে ১০ হাজার প্রবাসী কর্মী মারা যায়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীও রয়েছে।
মৃত শ্রমিকদের অর্ধেকের মৃত্যুর কোনো অন্তর্নিহিত কারণ কার্যকরভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। মৃত্যুসনদে স্বাভাবিক মৃত্যু বা হৃদরোগের কথা বলা হয়। কিন্তু উচ্চতাপ-সংক্রান্ত মৃত্যুর তথ্যের কোনো নিবন্ধন নেই।
প্রাণঘাতী তাপ ‘উপসাগরীয় অঞ্চলে অভিবাসী কর্মীদের ওপর চরম তাপমাত্রা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) শনিবার রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এর যৌথ আয়োজক ছিল রামরু এবং অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী কর্মীদের বড় অংশ কাজ করে অবকাঠামো নির্মাণ খাতে। দিনে গরমের মধ্যে তাদের কাজ করতে হয়। এতে তাপজনিত নানা রোগে শুধু কিডনি নয়, মস্তিষ্ক ও অন্য অঙ্গপতঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে তাপমাত্রা বাড়ছে। এতে প্রবাসী কর্মীদের মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চরম তাপ ও সূর্যালোকে দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে স্থায়ী শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এজন্য আজীবন চিকিৎসার প্রয়োজন।
কুয়েতের একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে ৩৫ শতাংশ। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলে কুয়েত, বাহরাইন ও সৌদি আরবের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৮০ দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাবে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করে রামরুর নির্বাহী পরিচালক সি আর আবরার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অভিবাসী শ্রমিকরা।:”
কর্মীদের আবাসন, পুষ্টিকর খাবার, বীমা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। লাখো প্রবাসী কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। তাদের সুরক্ষায় দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর যথাযথ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।