আমরা কথা বলি, কাজ করি না: সেতুমন্ত্রী
আমরা কথা বলি, কাজ করি না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের (বিআরএসপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা কথা বলি, কাজ করি না। নানাভাবে কাজ বিলম্বিত হয়। কাজেই বিশ্বব্যাংকের যে ফান্ডিং, যে প্রজেক্টের জন্য, এ কাজটি আমরা শপথ নিই, বাস্তবায়নটা যথা সময়ে না হলে দেশের মানুষ বিরক্ত হবে। আমাদের আর সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। আমাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব কাজে হাত দিতে হবে। আজ একটা বাস্তবতা আছে আমাদের চার পাশে– যুদ্ধ, ক্লাইমেট চেঞ্জ।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বব্যাংক ইচ্ছে করলে পদ্মা সেতুতে জড়িত থাকতে পারত। এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তবে এজন্য শুধু বিশ্বব্যাংককে দায়ী করা যাবে না। এর সঙ্গে আমাদের দেশের কিছু বাঘা বাঘা ব্যক্তিও জড়িত ছিল। এটা বড় ভুল বোঝাবুঝি।”
সেতুমন্ত্রী বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়নে এ দেশে কিছু সমস্যা হয়, সে বাস্তবতা স্বীকার করতেই হবে। ঘাটে ঘাটে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এতে কষ্ট বাড়ে, সময়ও বাড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাংক যে সম্মান দেখিয়েছে এবং বাজেটে যে সহযোগিতা করেছে, তার জন্য বিশ্বব্যাংককে আমি, ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক ক্ষতি হয়। আমাদের ভাবনা অনেক সুদূরপ্রসারী। কিন্তু বাস্তবায়ন খুবই ধীর। আমাদের বাজেট সহায়তায় যে পরিমাণ ফান্ডিং তারা করেছে, আজ একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, এটা একটা বিরাট অর্জন।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা যতই পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, একদিনে একশো সেতু উদ্বোধন করি, তারপরও যখন দুর্ঘটনায় খবর দেখি তখন মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার। আমরা মন্ত্রী হলেও তো মানুষ। এ বিষণ্ণতার দুর্ঘটনা আমাদের মনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।”
তিনি আরও বলেন, “এত মেগা প্রজেক্ট, এত উন্নয়ন করার পরও স্বস্তি পাচ্ছিলাম না দুর্ঘটনার কারণে। কেন হবে? আমরা কি এটা এড়াতে পারি না? আমরা এত কিছু করতে পারি, আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারি, এটা কেন পারব না? এটাই হচ্ছে আজ প্রশ্ন। বিশ্বব্যাংক এখানে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মধ্যে বেশির ভাগ ফান্ডিং করছে।”
সেতুমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রথম কাজ হবে, লোকজনকে বলতে হবে পরিবেশ রক্ষা করতে। এই কাজটা আমাদের আগে করতে হবে। যে মানুষগুলোর জন্য আমরা এত কিছু করছি, তাদের তো জীবিকার জন্য রাস্তায় যেতে হবে। সেখানে তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ।”
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল (পরিবহন) প্র্যাকটিস ম্যানেজার ফেই ডেং। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সচিব শরিফা খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে সড়কের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হয়। সড়কের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অপরাধ ও অপারেশন) মো. আতিকুল ইসলাম বিপিএম-বার, পিপিএম-বার, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।