সঞ্চারী ভৌমিকের কবিতা প্রেমিকার পত্র

প্রেমিকার পত্র ১
ক. বৃষ্টি শেষের ছাদের প্রতি একটা সময়ে অকথ্য এক প্রেম ছিল। আমাদের বর্ষামঙ্গলের যাত্রা আষাঢ়ে শুরু হয়ে হিমেল হাওয়া আসার প্রাকমুহূর্ত পর্যন্ত অবিরত চলতো।
খ. জমে যাওয়া জলের ফোঁটা ফোঁটা পতন দেখতাম চিলেকোঠার ভাঙা কার্ণিশ দিয়ে। চিলেকোঠা ছিল প্রথম প্রেমের আঁতুড়ঘর। ঝড়পাখির আশ্রয়। আদর ও বিষাদ পাশাপাশি সোহাগ মাখত যার গায়ে।
গ.পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতাম। সারারাত মাতাল হাওয়া। গোল্ডফ্লেক। মুখের ওপর উড়ো চুল। চুল সরিয়ে জিগেস করতে, গন্ধ মাখবে গায়ে? কীসের গন্ধ? কেন, ওই চাঁদ, তার আলো!… তারও তো একটা গন্ধ আছে…
প্রেমিকার পত্র ২
ঙ. মেট্রোতে ফিরছি বিকেল ৫ তখন। দুটো কামরার মাঝের সংযোগে দাঁড়িয়ে প্রতিদিনের মতো। হঠাৎ বৃষ্টি, ঝিরঝির। পাগলাটে দুজন নেমে গেলাম ময়দানে। তারপর, তারপর সবটা যেন কবিতা। ভেজা ট্রামলাইনে হাত ধরে খুব হাঁটলাম। আমরা সেদিন কোনও কথা বলিনি।
চ. দোলপূর্ণিমার আগের রাত। কোপাইয়ের পারে বসে। দুজনের হাতে দুটো জয়েন্ট। সবে মাত্র ধরিয়েছে। একটা দুটো তিনটে করে আলো এলো। আলো ডাকলো, সবজে আলো, নিয়ে গেল আলো পাড়ায়, জোনাকির দেশে। সমস্ত সন্ধে দিয়ে রাত নামল জয়ন্টে, হাঁড়িয়া আর জোনাকির হ্যালে।
গেঁও প্রেমিক রাত শেষে প্রেমিকার পায়ে আলতা পরায়!
সেদিন সারারাত আমরা গন্ধ মেখেছিলাম।
প্রেমিকার পত্র ৩
ছ. খুব ঝড়ের পর আবার সে আসে। ভালোবাসে। মিলিয়ে যায়। পাতার শরীর চিহ্ন রেখে দ্যায়।
প্রেমিকার পত্র ৪
জ. আদরের গভীরতায় অনেক ক্ষত জন্মায়। বড় হয়। সমস্ত রাত্রি নিভে গেলে ক্ষত আর রক্ত দুজনেই দুজনকে নির্ভর করে।
প্রেমিকার পত্র ৫
ঝ. যে আলোগুলো রঙকে আগলে রাখে, তাদের জন্যে আদর-সোহাগ।
প্রেমিকার পত্র ৬
ঞ. `কি রে,কবিতা লিখিস এখনও?’
‘না, ঠিকমতো বাঁচতেই জানি না, কবিতা লিখব!…`
প্রেমিকর পত্র ৭
ট. বৃষ্টি নামুক ভীষণ জোরে। একটা দুটো নীল জমে গড়ে উঠুক মেঘবাড়ি। জোনাকি রঙের আলো মাখুক গেঁও মেয়ের খোঁপার ফুল।
আদর নামুক সিক্ত ঠোঁটে। স্বপ্ন আঁকুক শালপিয়ালের ছেলে। বিচ্ছেদ যাতনা জন্ম দিক অভিসারকে। প্রেমিকা স্পষ্ট স্বরে বলে উঠুক, তুকে লিয়ে পলাইন যাব রে…