‘আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থীদের পুনর্বাসন করা হবে’
আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থীদের পুনর্বাসন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ রোববার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় র্যাব-১২`র কার্যালয় চত্বরে চরমপন্থী সদস্যদের আত্মসমর্পণ উপলক্ষে র্যাব আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর মানবতা ও উদারতার কারণে আজ অপরাধ জগতের চরমপন্থী সদস্যরা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পেয়েছে। র্যাবের পৃষ্ঠপোষকতায় আত্মসমর্পণকারীরা আলোর পথ দেখতে শুরু করেছে। সরকার সব আত্মসমর্পণকারীদের পুনর্বাসন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা সরকারের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে অপরাধ জগৎ থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধে লিপ্ত বিপথগামীদের বিরুদ্ধে র্যাব ও পুলিশ কঠোর অবস্থানে যাবে। কাজেই এখনও অপরাধীদের ভালো হবার সুযোগ রয়েছে।”
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আশির দশকে চলনবিল অঞ্চলে সর্বহারা পার্টি প্রথম ঘাঁটি গাড়ে। এরপর থেকে এই অঞ্চলে চরমপন্থী ও সর্বহারা দল গড়ে ওঠে। ১৯৯৬ সালে প্রথম এদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম প্রথম উদ্যোগ নেন।”
তিনি আরও বলেন, “মানবতার মা হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে র্যাবের মাধ্যমে আত্মসমর্পণকারী সর্বহারা ও জলদস্যুদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে অনুদান দিয়ে তাদের পরিবারে কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তারা এখন স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করছেন।”
র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বিপিএম (বার) পিপিএম এর সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহামেদ, বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থীদের পক্ষ থেকে টাঙ্গাইলের সাইদুল ইসলাম, রাজবাড়ীর ফারুক শেখ এবং চরমপন্থী শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী নাজমা আক্তার বক্তব্য রাখেন। তারা বক্তব্যে তাদের অন্ধকার জীবনের দুঃখ, দুর্দশা ও চরম নিরাপত্তাহীন জীবনের কথা শোনান। বর্তমানে তারা আলোর পথে এসে জীবনকে নতুন করে গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মেহেরপুর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও নাটোরের ৩১৫ চরমপন্থি সর্বহারা আত্মসমর্পণ করেন। এসময় তাদের পক্ষ থেকে ২১৩টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ও দেশীয় অস্ত্র জমা দেওয়া হয়।