আন্তর্জাতিক

চার লাখ বছর আগে মঙ্গল গ্রহে সমুদ্র ছিল

মঙ্গল গ্রহের অসমতল ভূমি, বালিয়াড়ি ও ভৌগোলিক চরিত্র বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রায় চার লাখ বছর আগে সেখানে পানির অস্তিত্ব ছিল। একসময় সেখানে সমুদ্রের লবণাক্ত পানির প্রবাহ ছিল।

চীনের ঝুরং রোভার মঙ্গলের যে ছবি পাঠিয়েছে, তা খতিয়ে দেখে এ দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। তা নিয়ে বিশদ গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। ২৮ এপ্রিল ‘সায়েন্সেস অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।

রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, মাত্র চার লাখ বছর আগেও হয়তো মঙ্গলে পনির স্রোত প্রবাহিত হয়েছে। এই গবেষণা আগামী দিনে মঙ্গলের প্রাণের খোঁজ চালানোর ক্ষেত্রে আরও সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বেজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের ভূবিজ্ঞানী ঝিয়াওগুয়াং কিং-এর বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, চার লাখ বছর আগে মঙ্গলের ভৌগোলিক পরিবেশ বর্তমান দিনের পৃথিবীর মতোই ছিল। ফলত সেই সময় মঙ্গলেও পানি তরল অবস্থাতেই ছিল। গ্রহের নিম্নতর অক্ষাংশে লবণাক্ত পানি বয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

যে ঝুরং রোভার থেকে প্রাপ্ত তথ্যে ভর করে নতুন গবেষণাটি করা হয়েছে, সেটি চীনের প্রথম রোভার। ২০২১ সালের মে মাসে মঙ্গলের মাটি ছোঁয় সেটি। মঙ্গলের বিষুবরেখার উত্তরের ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়া অঞ্চলে সেটি পদার্পণ করে। এরপর ৯ মাস ধরে তোলা ছবি থেকে, মঙ্গলের মাটির রাসায়নিক গঠন নিরীক্ষণ, ভূমির ফাটলের পরিমাপও সংগ্রহ করা হয়।

ঝুরং রোভারের পাঠানো ছবি প্রথমবার যখন দেখেন ঝিয়াওগুয়াং, কার্যতই চমকে উঠেছিলেন তিনি। কারণ প্রথম ছবিতে পানির অস্তিত্বের নজির চোখে পড়ে তার। শুধু বাতাসের পক্ষে ওই ধরনের ভূতাত্ত্বিক চিহ্ন রেখে যাওয়া সম্ভব নয় বলে অনুধাবন করেন তিনি। উল্কাপাতের ফলে মঙ্গলের বুকে সৃষ্ট গহ্বরও পরীক্ষা করে দেখা হয়।

তাতে দেখা যায়, সেটি ১৪ থেকে চার লাখ বছর আগে সৃষ্টি হয়। তাই কোটি কোটি নয়, কয়েক হাজার বা লক্ষ বছর আগেও মঙ্গলের বুকে পানির অস্তিত্ব ছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

এর আগে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মঙ্গলে বরফ থাকার প্রমাণ পেয়েছিল। গ্রহের উত্তর অক্ষাংশে পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে জানিয়েছিল নাসা। তবে ওই এলাকা বসবাসের পক্ষে অত্যন্ত শীতল বলে দাবি করেছিল তারা।

কিন্তু নতুন গবেষণায় বোঝা যাচ্ছে, নিম্নতর অক্ষাংশে তাপমাত্রার হার যা, তা প্রাণ ধারণের পক্ষে উপযোগী।

জনমত ডেস্ক

নিউজ পোর্টাল, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button