আজ রাজশাহী যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, ২৫ প্রকল্প উদ্বোধন
আজ রোববার রাজশাহীতে পা দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তার আগমন উপলক্ষে একমাস ধরে নানা প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ঐতিহাসিক মাদ্রাসা (হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) মাঠের সাজসজ্জা ও মঞ্চ তৈরির কাজও প্রায় শেষ।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে রাজশাহীকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল রূপে। সর্বত্র শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন। এসব ব্যানারে সরকারের উন্নয়নচিত্র বেশি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে চলছে ব্যাপক প্রচারণা।
সমাবেশ উপলক্ষে রাজশাহীতে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশ, সকল গোয়েন্দা সংস্থাসহ পুরো আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নগরীজুড়ে তৎপরতা বাড়িয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই সমাবেশস্থল মাদ্রাসা মাঠে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মাঠে জনসাধারণের চলাচলও এখন সীমাবদ্ধ।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশি পাহারা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে প্রায় পাঁচশোর বেশি স্বেচ্ছাসেবী সমাবেশস্থল বিভিন্ন পয়েন্টে থাকবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. আনিসুর রহমান বলেন, “আরএমপি যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্রের বিষয়টি নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত থাকবে না। তবে এর বাইরে সকল নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবেই মনিটরিং করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে সামনে রেখে এরইমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে পুলিশ। ঢাকা হেড কোয়ার্টারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। যে কোনও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আগে থেকে তৎপর রয়েছে পুলিশ।”
ফায়ার সার্ভিস ও সিলিভ ডিফেন্সের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম বলেন, “বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) সঙ্গে সমন্বয় করেই মাঠে কাজ শুরু করা হয়েছে। ২৭ জানুয়ারি থেকেই মাঠে ফায়ার সার্ভিস সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী যেসকল ভেন্যুতে যাবেন, সেখানেও আমাদের ব্যবস্থা থাকবে। সমাবেশকে সামনে রেখে তাদের প্রায় ৮৫-৯০ জনের টিম প্রস্তুত রয়েছে।”
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, “সমাবেশ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তাদের মতো দায়িত্ব পালন করবে। তবে তাদের পক্ষ থেকে পাঁচশো স্বেচ্ছাসেবী সেবা দেবে। সমাবেশে সকলের জন্য পানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।”
র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সকল পর্যায়ে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সাদা পোশাকে সমাবেশস্থলসহ নগরী ও যে রুটে প্রধানমন্ত্রী আসবেন সেখানে গোয়েন্দা তৎপরতা আছে। এছাড়া সমাবেশের দিন মাঠে ১০ পেট্রোল র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ৩টি রিজার্ভ পেট্রোল থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ প্রধানমন্ত্রীর স্পেশাল ফোর্সের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আর অপ্রীতিকর কোনও কিছুর শঙ্কা এখন পর্যন্ত নেই। আর এ বিষয়ে র্যাব তৎপর রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার রাজশাহীতে দিনব্যাপী সফরে প্রায় ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ২৫টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী আনুমানিক ৩৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ের আরও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো হলো: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। এছাড়া সিটি করপোরেশন আরও যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সেগুলো হচ্ছে—শেখ রাসেল শিশু পার্ক, মোহনপুর রেল ক্রসিংয়ের ওপর ফ্লাইওভার, চার লেনের সড়ক এবং ভাদ্রা রেলক্রসিং থেকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য একটি পৃথক লেনসহ রোড ডিভাইডার, চার লেনের সড়ক এবং রোড ডিভাইডার।
বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে সিটির হাট পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন এবং সড়ক প্রশস্তকরণ, কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারি ক্রসিং এবং কার্পেটিং সড়কের উন্নয়ন, হাই-টেক পার্ক হয়ে রেন্টুর খারির আড়ত থেকে ধলুর মোড় পর্যন্ত নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ এবং কার্পেটিং। কোর্ট থেকে শাহারতলী ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ।