আন্তর্জাতিক

অজ্ঞাত স্থানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সামরিক প্রধানের বৈঠক

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রধান ভালেরি জালুঝনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মার্ক মিলি। জালুঝনির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে পোল্যান্ড যান মার্কিন সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ। তাদের মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে পোল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের অজ্ঞাত এক স্থানে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী নানা আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে জালুঝনি বলেন, “মার্ক মিলির কাছে ইউক্রেনের বাহিনীর জরুরি প্রয়োজনগুলোর তালিকা দেয়া হয়েছে। রাশিয়াকে থামাতে ইউক্রেনের কি কি সমরাস্ত্র লাগবে তা নিয়েই বৈঠকে মূলত আলোচনা হয়।”

এক বছর ধরেই দুই সামরিক প্রধানের মধ্যে নিয়মিত কথা হচ্ছে। তবে তারা কখনও সরাসরি দেখা করেননি। সম্প্রতি রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন নতুন জয় পেতে শুরু করার পর পশ্চিমা দেশগুলোও ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটেই ইউক্রেনের সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করলেন মার্ক মিলি।

মিলির মুখপাত্র সেনা কর্নেল ডেভ বাটলার বলেছেন, “দুই জেনারেল ব্যক্তিগতভাবে দেখা করাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন। তারা প্রায় এক বছর ধরে নিয়মিতভাবে কথা বলছেন। তারা একে অপরকে ভালো করেই জানেন। তারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যে প্রতিরক্ষা করার চেষ্টা করছে, সে সম্পর্কে বিশদভাবে কথা বলেছেন। দুজন সামরিক পেশাদারের জন্য একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে কথা বলার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।”

বাটলার আরও বলেন, “আগে ধারণা করা হচ্ছিল, জালুঝনি এই সপ্তাহে ন্যাটো এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ব্রাসেলসে যাবেন। কিন্তু যখন সোমবার পরিষ্কার হয়ে গেল যে, এটা ঘটবে না, মিলি ও জালুঝনি দ্রুত সীমান্তের কাছে পোল্যান্ডে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন।”

এর আগে জার্মানিতে পেন্টাগনের প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ কর্মসূচি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মার্ক মিলি। সেখানেও ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন তিনি। জেনারেল মার্ক মিলি যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান। মার্কিন সেনাবাহিনীতে সর্বোচ্চ পদে আসীন মার্ক মিলি। ওয়াশিংটন সম্প্রতি ইউক্রেন সেনাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়।

জার্মানির ব্যাভারিয়া রাজ্যে মার্কিন সেনাদের গ্রাফেনওহের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইউক্রেন সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। মার্কিন সামরিক প্রশিক্ষকরা এ প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। পেন্টাগন এখন থেকে প্রতি ৫ থেকে ৮ সপ্তাহে ৫শ ইউক্রেনীয় সেনাকে প্রশিক্ষণ দেবে। অস্ত্র চালনা ছাড়াও যুদ্ধক্ষেত্রে সহযোগিতা, পদাতিক, আর্মার, আর্টিলারি ও এরিয়াল ইউনিটের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মার্কিন প্রশিক্ষকরা।

কয়েকজন মার্কিন বেসামরিক নেতা ইউক্রেনে গেলেও কোনো সামরিক কর্মকর্তারা ইউক্রেনে যাননি। মার্কিন সামরিক বাহিনীর কেউ ইউক্রেনে প্রবেশ করলে রাশিয়া সেটিকে রেড লাইন ক্রস হিসেবে দেখতে পারে। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, কিয়েভের দূতাবাসের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্য কোনো ইউনিফর্ম পরিহিত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ইউক্রেনে প্রবেশ করবে না।

মিলি এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা প্রধানরা আজ বুধবার ও বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে বৈঠক করবেন। এতে ইউক্রেনের চলমান এবং ভবিষ্যতের সামরিক প্রয়োজনগুলি নিয়ে আলোচনা হবে। ডিসেম্বরে দ্য ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জালুঝনি বলেছিলেন, রাশিয়ানদের পিছনে ঠেলে দেয়ার জন্য ইউক্রেনের ৩০০টি ট্যাঙ্ক, ৬০০-৭০০ যুদ্ধযান এবং ৫০০ হাওয়াইটজার প্রয়োজন।

মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্ডারজেজ দুদা বলেন, “আমরা আশা করছি, আরও কয়েকটি দেশ ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক দেবে।” সূত্র: আল জাজিরা

জনমত ডেস্ক

নিউজ পোর্টাল, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button